Saturday, August 31, 2019

প্রতীতি

প্রতীতি
     তাসমিয়া জান্নাত
_______________________
আচ্ছা!  তোমরা তো জানো, আমি ভাল। তাই না?
কিন্তু আমি খারাপ হতে চাই।
শোন তবে খারাপ হওয়ার বাসনা।

যদি আমি খারাপ হই তবে অন্তত অন্ধকারগামীদের জন্য আমার অন্তরে আঘাত লাগবে না।
খারাপ আর খারাপের তো হয় না তুলনা।

তমসাবৃত কুঠুরিতে পড়ে থাকতে কেমন লাগে, তা আমি জানতে চাই!

হ্যাঁ, আমি অপ্রকৃষ্ট হব!

সিগারেটের এক একটা টান কি করে দুঃখ ভুলায়, মদের প্রতি ঢোঁকের কি রহস্য তা বুঝতে চাই।

সারারাতব্যাপী জেগে থেকে সারা দিনমান ঘুমিয়ে কাটানো সেই উচ্ছন্ন তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদেরকে বুঝতে চাই।

দিনের রোশনাই যাদের অভিঘাতী, কৃষ্ণাভ কুঠুরি যাদের আত্মীয়, আমি তাদের দলে ভিড়তে চাই।

আমি নিকষকালো গহ্বরে ডুব দিতে চাই!
আমি তাদের কষ্টের শরিকানা হতে চাই!
আমি তাদের সনে আমার বন্ধুত্ব পাতাতে চাই!

তারা অকিঞ্চিৎকর নয়, তারা অনাদেয় নয়।

এ জগদ্বাসী তাদের বুঝে নি, এ সমাজ তাদের পাত্তা দেয় নি!
আজ তাইতো তারা ধোঁয়াশা জগতের বাসিন্দা।
আজ তারা উন্মাদ!

ওহে পৃথিবী!  বুঝতে শেখো তাদের।
ওহে সমাজ! মূল্যায়ন কর তাদের।
ওহে পরিবার!  তাদের সুখের বস্তুকে ছিনিয়ে নিও না।
ওহে পিতা-মাতারা! নিজেদের ইচ্ছা আর জেদকে সন্তানের উপর চাপিয়ে দিও না।

আর কে হবে বিপথগামী?
আর কে হবে হতাশাগ্রস্থ?

নিকোটিনের চাপা অনল আর ভস্মীভূত হবে না।
মদের ঘোরে আর কেউ অপ্রকৃতস্থ হবে না।

প্রাণোচ্ছলতায় ভরপুর হবে গোটা ধরাধাম!

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬ 

এক তমসায়

এক তমসায়....
______তাসমিয়া জান্নাত
_______________________________________
যখন বাড়িতে ছিলাম, তখন তমসাচ্ছন্ন গাছগাছালির ভেতরে একখন্ড রুপালি চাঁদের দেখা মিলতো। অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকতাম। খানিক পরেই সম্বিত ফিরে আসতো।  এতো সুন্দর তারায় ঝলমল আকাশ!! মাঝখানে চাঁদ যেন রাণীর মতো বসে আছে।
আগে একাকি রাতে উঠোনে যেতে ভয় পেতাম। এখন ভয় পাইনা। চাঁদ আর তারাদের সাথেই মিতালী করি। জোনাকি পোকার তেমন দেখা মেলে নি এবারে। তবে ঝিঁ ঝিঁ পোকার গা ছমছমানো আওয়াজ শুনেছি। আমাদের পুকুরে ব্যাঙের গান শুনেছি। যদি একাকি আরো পথ যেতে পারতাম হয় তো আরো কিছু অনুভব করতে পারতাম। কিন্তু একটু পরেই বাবা/মার ডাক পড়তো।  ইশা!!!! রাতে বাইরে কি করস? ভেতরে আয়!!! ব্যস!!! কল্পনার জগত শেষ। অগত্যা সব  ফেলে ভেতরে চলে আসতে হলো।

মিসিং......এখানে এসব কিচ্ছুইই নেই

৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ 

স্মৃতির আয়নায় দুঃসহ এক স্মৃতির প্রতিবিম্ব

স্মৃতির আয়নায় দুঃসহ এক স্মৃতির প্রতিবিম্ব...
_______তাসমিয়া জান্নাত

জীবনের পড়ন্ত এক বিকেলে আমি হিসেব কষতে বসলাম সেই ফেলে আসা দিনগুলির। জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া কিছুর মাঝে হাতড়ে বেড়ালাম একান্ত নিজস্ব কিছুর। দেখলাম, স্মৃতির আয়নায়  ঝাপসা ঝাপসা কোন কিছু। আলতো হাত বুলিয়ে আয়নার ধূলো মুছলাম। দেখি যেন এক জাদুর আয়না। সেই ফেলে আসা দিনগুলি কত সুন্দর ফ্রেমবন্দী হয়ে আছে  আয়নার ভেতরে!! বেলা ডুবার সেই হলুদবর্ণতেও এতটুকু ম্লান হয়ে যায় নি।

আহা! কি মধুর না ছিল সেই সময়!
স্বপ্নালু চোখে সে কি স্বপ্নের বাহার!

আচ্ছা! তুমিও কি আমার মত কখনো বেলা ডুবার কোন এক ক্ষণে স্মৃতির আয়নায় একটিবারের জন্য তাকিয়ে লক্ষ্য করেছ, কি সুন্দর ছিল সেই স্বপ্নমহল?

ঠিক আছে, তুমি হয়তো মাথা নিচু করে আছ আমার প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে। আমিই বরঞ্চ বলে দিই___ নাহ, তুমি কখনো তাকিয়ে দেখ নি সেই মনমাতানো মোহনীয় সৌন্দর্য।

কি জান তো? আকস্মিক তোমার সেই ভালোবাসা পেয়ে আমার দু'চোখে শুধু তুমিই বিরাজমান থাকতে। তোমার অবহেলা, অনাদর পেয়েও এই শূণ্য শুধু তোমাকেই খুঁজে বেড়াতো। আর আমি ডায়েরির পাতায় লিখতাম____
      "এ শূণ্য হৃদয় তোমায় খুঁজে ফিরে
     অবচেতন, তবু চেতনায় এসে ভীড়ে।"

কারণ আমি যে তোমায় সত্যিই হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম, আর বেসেছিও।

অচেনা, অজানা এক স্বপ্নমহলে রাণী হওয়ার সাধ জেগেছিল যে। বুঝতে পারি নি সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী এক তাসের ঘর মাত্র। যা নিমিষেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে।

যাক, জীবন তো থেমে থাকে না। বয়েই চলে নিজস্ব ধারায়।

আর হিসেব মেলাতে পারছি না। চোখ দুটো ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। এই স্মৃতির আয়নায় জমে থাকা ধূলো আমি আর কখনোই মুছতে চাই না। হৃদয় চিলেকোঠার কোন এক কোণে পড়ে থাকুক এই আয়না। যতদিন না মানুষরূপী এ দেহঘরের বিনাশ হয়।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ
_____তাসমিয়া জান্নাত

বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!
তুমি আমার প্রিয় স্বদেশ।
জন্মেছি তোমার কোলে,
বেড়েছি তোমার পরশতলে।
কি শীতল তোমার বাতাস,
নীল রঙিন এক আকাশ।
মন জুড়ানো পাখির গান,
কল কল নদীর কলতান।

সবুজ চাঁদরে ঢাকা মাঠ,
ধুলোমাখা পথ-ঘাট।
স্বর্গীয় এক পরিবেশ,
ভুলে যাই কষ্ট-ক্লেশ।

তুমি এক আশার বাতি,
বিশ্বজুড়ে জুড়ে ছড়াও জ্যোতি।
হও সবে গগনচুমী
তুমিই তো প্রিয় মাতৃভূমি।

একুশের পয়গাম

তাসমিয়া জান্নাত

এসেছে আজ দেখ সবে একুশের পয়গাম
রক্ত-মাখা এই ভাষায় আমার অহংকার
এই ভাষারই নিশান হাতে চলব বারংবার
এই ভাষার তরে নোয়ায় মাথা গোটা ধরাধাম।

তোমরা কেন দাও না সম্মান, রাখ না মান
বাংলা ভাষা, বাংলা মা এইতো আমার সংসার
এই ভাষাতেই বলতে শিখি, এই ভাষা মা'র
এই ভাষা যে সবচে সেরা, দিয়েছি তার প্রমাণ।

ভাষার জন্যে বাংলা সন্তান দিয়েছে তার প্রাণ
শহীদ তারা সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার
জীবন দিয়ে দিয়েছে সুযোগ শির উঁচু করবার
চল সবাই উঠে দাঁড়াই করি তাদের মহীয়ান।

পতাকা

পতাকা তুমি আছ বলেই
বিশ্ব মানচিত্রে ছোট্ট এক বাংলাদেশ,,
পতাকা তুমি আছ বলেই
মনের ভাব প্রকাশে আসে না ক্লেশ।

পতাকা তুমি আছ বলেই
টিকে আছে প্রাণের বাংলাদেশ
পতাকা তুমি আছ বলেই
দুঃখ মাঝে পাই সুখেরই লেশ।

___তাসমিয়া জান্নাত
বাড়ি ফেরা হলো না আমার
নিয়তির বিধানে, জীবনের তাগিদে
থেকে গেছি আমি এই দুঃখ ধরাতে...
মানে না এই মন তবু
শুনে না বারণ কভু সে
যেতে চায় বারে বারে সুখপাড়াতে...

____তাসমিয়া জান্নাত

শামসুর রাহমান শামসুর রাহমান ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার রূপকার। বিংশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্র...