Wednesday, September 4, 2019

শামসুর রাহমান


শামসুর রাহমান ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার রূপকার। বিংশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধানতম পুরুষ হিসেবে স্বীকৃত।

তাঁর জম্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলীতে নানার বাড়িতে। পিতার বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরার পাড়াতলী গ্রামে।

শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে পড়লেও অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেননি। পরে পাস কোর্সে ইংলিশে ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

তাঁর লেখনির সূত্রপাত ঘটে ১৮/২০ বছর বয়সে। ১৯৪৯ সালে তাঁর আধুনিক কবিতা এবং আন্তর্জাতিক-আধুনিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। সাপ্তাহিক 'সোনার বাংলা' পত্রিকায় ১৯৪৯ সালে তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা 'উনিশশ'উনপঞ্চাশ' মুদ্রিত হয়। ১৯৬০ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে' প্রকাশিত হয়। মূলত তিনি 'কবি' খ্যাতি পেয়েছেন স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন আবেগ ও প্রত্যাশা নিয়ে লেখা 'বন্দী শিবির থেকে' কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে। তিনি 'মজলুম আদিব' ছদ্মনামে এটি রচনা করেন।

তাঁর স্বাধীনতা নিয়ে লেখা জনপ্রিয় কয়েকটি কবিতা রয়েছে।  তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা, স্বাধীনতা তুমি ইত্যাদি। এছাড়াও 'আসাদের শার্ট' উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান নিয়ে রচিত এক অনন্য কবিতা। 'বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা'  ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত একটি কবিতা।

তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, স্মৃতিমূলক রচনা, শিশুতোষ রচনা ইত্যাদি সব শাখায় সমানভাবে বিচরণ করেছেন। মনে পড়ে, 'সাতরঙ' মাসিক পত্রিকার পড়া 'স্মৃতির শহর', 'উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ' ইত্যাদি রচনা।

তিনি তাঁর লেখনির মাধ্যমে লিখার পুরনো ধারাকে বদলে দিয়েছিলেন। ছন্দ ছাড়াও যে কবিতা হয়, তা তিনি তাঁর কবিতায় দেখিয়ে গেছেন। রবীন্দ্র, নজরুল, আহসান হাবীবরা যে পথে হাঁটতে ভীত ছিলেন, সাহসিকতার সাথে শামসুর রাহমানই সেই পথে পথ চলেছেন। তিনি বারবার মৌলবাদিদের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হলেও নিজের পথ থেকে সরে দাঁড়াননি। সমৃদ্ধ করে গেছেন আমাদের বাংলা সাহিত্যকে। পৌঁছিয়ে দিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়৷

২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট বাংলার আধুনিক কবিতার এই রুপকার মৃত্যুবরণ করেন।।

সুকান্ত ভট্টাচার্য

সুকান্ত ভট্টাচার্য 


সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য নাম৷ তিনি ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নিবারুণ ভট্টাচার্য এবং মা সুনীতি দেবী।

তাঁর বাল্যজীবন দারিদ্র্যের মধ্যে অতিবাহিত হয়েছে। তাঁর বাল্যশিক্ষা শুরু হয় কলকাতার কমলা বিদ্যামন্দির থেকে এবং সর্বশেষ ১৯৪৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন।

আট-নয় বছর বয়স থেকেই তাঁর লেখনির বিকাশ ঘটে।  স্কুলের হাতে লেখা পত্রিকা 'সঞ্চয়'য়ে একটি ছোট্ট হাসির গল্প লিখে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর বিজন গঙ্গোপাধ্যায়ের 'শিখা' কাগজে তাঁর প্রথম কোনো লিখা ছাপা হয়৷ সেটি ছিল 'বিবেকান্দের জীবনী'। যখন তাঁর বয়স ১১ তখন তিনি 'রাখাল ছেলে' নামে একটি গীতিনাট্য রচনা করেন৷ এটি পরে 'হরতাল' বইতে সংকলিত হয়। তিনি শুধু কবিতা নয়, গল্প, প্রবন্ধ, গীতিনাট্য ইত্যাদিও লিখতেন। পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকেই 'সুকান্ত সমগ্র' নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়।

তিনি রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদ আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে কলম ধরেন৷ ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। একই বছর বাংলার শোষিত মানুষের কর্মজীবন, ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম, সমাজের দুর্দশাজনিত বেদনা এবং স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন প্রভৃতি নিয়ে লেখালেখি করতে 'আকাল' নামক একটি সংকলনগ্রন্থ সম্পাদনা করেন।

তিনি তারুণ্যের শক্তিতে বলীয়ান একজন ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর কবিতা পাঠ করে মানুষ অসীম সাহসী মনোভাব অর্জন করত এবং কর্মে স্পৃহা পেত। তিনি জেতার মূলমন্ত্র শিখিয়ে গেছেন। তিনি অসহায় ক্ষুধার্থ মানুষের কথা বলতেন ঠিক এই ভাবে..."ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি"।

তিনি ১৯৪০-১৯৪৭ পর্যন্ত লেখালেখির সুযোগ পান।।এই অল্প সময়েই তিনি বাংলা সাহিত্যজগতে নিজের মেধা ও স্বকীয়তায় জায়গা করে নিয়েছেন। হারিয়ে যাননি রবীন্দ্র, জীবনানন্দদের মতো উঁচুমানের কবি-লেখকদের ভীড়ে। তাঁর লেখনিতেই জীবনের বাস্তবতা ফুটে উঠে।

উল্লেখযোগ্য রচনাবলিঃ ছাড়পত্র, পূর্বাভাস, ঘুম নেই, মিঠে কড়া, গীতিগুচ্ছ, হরতাল ইত্যাদি

এই তরুণ মেধাবী কবি পার্টির কাজে অত্যধিক ব্যস্ত হয়ে পড়া, লেখালেখি ইত্যাদিতে অত্যধিক পরিশ্রম করেছেন এবং নিজের শরীরের যত্ন নেননি। ফলে ম্যালেরিয়া এবং দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

বেগম রোকেয়া

বেগম রোকেয়া


বেগম রোকেয়া, যাঁর পুরো নাম বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন। তিনি ছিলেন বাংলা নারী জাগরণের পথিকৃৎ।

তিমি ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার অন্তর্গত পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা একজন বিদ্যানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু মেয়েদের বিদ্যাশিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন রক্ষণশীলদের অন্তর্ভুক্ত। তথাপি বেগম রোকেয়ার পাঁচ বছর বয়সে মায়ের সাথে কলকাতায় বসবাসকালীন এক ম্যামের কাছে বিদ্যা শিক্ষা হয়েছিল। পরে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর বড় দু'ভাই কলকাতায় পড়াশোনার সুবাদে কুসংস্কারমুক্ত হয়ে যান।। তাঁর বড় বোনও বিদ্যানুরাগী ছিলেন। তাঁদের সহায়তায় গোপনে বেগম রোকেয়ার বিদ্যা শিক্ষা চলতে থাকে।

এরই মধ্যে ১৮৯৮ সালে ভাগলপুর নিবাসী উর্দুবাসী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। তিনি বিদ্যানুরাগী, সাহিত্যানুরাগী পাশাপাশি কুসংস্কারমুক্ত ব্যক্তি ছিলেন। স্বামীর সহায়তায় তাঁর বিদ্যা লাভ ঘটে। এবং বাংলা-ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে উঠেন। তাঁর সাহিত্যে পদার্পণও ঘটে। কিন্তু তাঁর বিবাহিত জীবন বেশিদিন ছিল না। ১৯০৯ সালের ৩ মে তাঁর স্বামী মারা যান। তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি সমাজ সংস্কার এবং নারী শিক্ষার বিস্তারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। স্বামীর অর্থে ভাগলপুরেই ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর  তিনি 'সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল' প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে এতে অবাঙালি মেয়েরা শিক্ষা লাভ করলেও পরবর্তীতে পর্দার অন্তরালে বাঙালি মেয়েরাও শিক্ষা লাভ করতে শুরু করে৷ এরপর সমাজ সংস্কার সাধনে ১৯১৬ সালে আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম' নামে বাঙালি নারীদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং বক্তব্য প্রদান করেন।

তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নারীবাদী লেখিকা, সমাজ সংস্কারক, নারী জাগরণ ও নারীদের শিক্ষাবিস্তারে অবদান রাখা এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি নারীদের দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার বাণী ছড়িয়ে দেন। নারীদের সম-অধিকার অর্জনের জন্য বলেন। পুরুষের চেয়ে নারীরা কোনো অংশে কম নয় তা তিনি প্রমাণ করেন। তিনি নারী এবং পুরুষকে একটি দ্বি-চক্রজানের সাথে তুলনা করেন। অর্থাৎ সাইকেলের একটি চাকা সমান না হলে তা যেমন চলে না, নারীরাও পুরুষদের সমান জ্ঞানার্জন এবং সবকিছুতে অবদান রাখার সুযোগ না পেলে সেই সংসারও অসমান চাকার সাইকেলের ন্যায় হবে। তিনি নারীদের পর্দার বাইরে বেরিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ, এটা ধর্মান্ধতা। পর্দার অন্তরালে না থেকে নারীদের জ্ঞানার্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ ইত্যাদি রচনা করেন। তিনি ছিলেন খুব যুক্তিবাদী মানুষ। হাস্য রসাত্মক, ব্যাঙ্গাত্মক এবং যুক্তির মাধ্যমে তিনি তাঁর লিখায় নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখতেন। ১৯০২ সালে 'পিপাসা' নামক একটি গল্প লিখার মাধ্যমে সাহিত্য জগতে তাঁর পদার্পণ ঘটে। এরপর একে একে তিনি রচনা করেন মতিচুর, অবরোধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন ইত্যাদির মতো গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর লিখা শুরুতে নবনূর, সাওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হতো।

২০০৪ সালে তিনি বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যা বাংলাদেশে নারীর নামে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর নামে হলের নাম রাখা হয়। এছাড়াও তাঁর জন্মস্থানে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র' প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সরকার ৯ ডিসেম্বর 'বেগম রোকেয়া দিবস' উদযাপন করে এবং একই দিনে বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য 'বেগম রোকেয়া পদক' প্রদান করা হয়।

১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

আলাওল

আলাওল


হা হা! এখনও মনে আছে, ছোটবেলায় আলাওলের কবিতা পড়ার সময় তাঁর নাম উচ্চারণ করতে পারতাম না। উচ্চারণ করতাম 'ওলৌল'। এটা নিয়ে বান্ধবীরা এখনও মাঝেমাঝে ক্ষ্যাপায়। 🤣

যাই হোক....এবার প্রসঙ্গে আসি।

মহাকবি আলাওল মধ্যযুগের একজন বিখ্যাত বাংলা কবি। আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ তাঁকে তৎকালের 'রবীন্দ্রনাথ' বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর জন্ম ১৫৯৩ সালে প্রাচীন গৌড়ের ফতেহাবাদে বর্তমান মাদারিপুর জেলার জালালাবাদে।

একদিন তিনি বাবার সাথে রোসাঙ্গ বা আরাকান (বর্তমান মায়ানমার) যাওয়ার পথে জলদস্যু কর্তৃক আক্রান্ত হন। এতে তাঁর পিতা মারা যান এবং তিনি জলদস্যু কর্তৃক বন্দি হলে পরবর্তীতে তাঁর স্থান হয় আরাকান রাজসভায়। এতে তাঁর কাব্যপ্রতিভা প্রকাশিত হলে আরাকান রাজার প্রধান আমাত্য মাগন ঠাকুরের সহযোগিতায় তিনি আরাকানের সভাকবি হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। এভাবে নানা চড়াই উতরাইয়ের মাধ্যমে তাঁর কাব্যচর্চা বিকশিত হয়।

তিনিই উনার সমসাময়িক কবিদের মধ্যে বৈশিষ্ট্যের বিচারে সর্বশ্রেষ্ঠ রচিত। ধর্মীয় ধারার কবিতার সমসাময়িকে রোমান্টিক প্রণয়কাব্য রচনায় মুসলমান কবিদের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের মধ্যে আলাওল ছিলেন অন্যতম।

তিনি বাংলা, আরবি, ফার্সি, সংস্কৃত, যুদ্ধবিদ্যা, সঙ্গীত ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন।

তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ 'পদ্মাবতী', যা মালিক মুহাম্মদ জয়সীর হিন্দিকাব্য 'পদুমাবৎ' এর অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ।তবে এতে তিনি সরাসরি অনুবাদ করেননি। তাঁর নিজস্ব স্বকীয়তা তিনি বজায় রেখেছেন। আলাওল তিন বছর সময় ব্যয়ে এর অনুবাদের কাজ শেষ করেন। একে একে তিনি রচনা করেছেন, সয়ফুলমুলক-বদিউজ্জামাল (এ দুটো ফারসি কাব্যগ্রন্থের অনুবাদ), হপ্তপয়কর, দৌলত কাজির অসমাপ্ত কাব্যগ্রন্থ 'সতীময়না'র লিখা শেষ করেন। এছাড়াও লোরচন্দ্রানী, রাগতালনামা, তোহফা, সেকান্দরনামা ইত্যাদিও তাঁর রচিত অনুবাদ ও মৌলিক গ্রন্থ। এছাড়াও কিছু গীতিকবিতাও রচনা করেছেন। রাগতালনামা ও গীতিকবিতাগুলো তাঁর মৌলিক গ্রন্থ। বাকিগুলো অনুবাদ গ্রন্থ।

১৬৭৩ সালে মহান এই পণ্ডিত কবির মৃত্যু ঘটে।

আরেকটা বিষয়ঃ গতবছর বাসা বদলানোর সময় উইপোকায় খাওয়া এক পুরনো 'পদ্মাবতী' বইয়ের উদ্ধার করেছিলাম। তা বোধহয় এখনও বস্তাবন্দিই আছে। বস্তা খুলে পড়ে দেখতে হবে।

কামিনী রায়

কামিনী রায়


কামিনী রায় বঙ্গীয় নবজাগরণকালের একজন প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ছিলেন কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা। তিনি খুব ভাবুক এবং কল্পনাপ্রবণ ছিলেন। তিনিই প্রথম মহিলা, যিনি তৎকালীন বৃটিশ ইন্ডিয়ায় সংস্কৃত বিষয়ে কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে অনার্স ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তিনি সেসময় নারী শ্রম তদন্ত কমিশনের সদস্য এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন।

তিনি ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর বৃটিশ ভারতের (অধুনা বাংলাদেশ) বাকেরগঞ্জ জেলার বাসণ্ডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

বাল্যকালে তাঁর পিতামহ তাকে স্তোত্র কবিতা আবৃত্তি করতে শেখাতেন এবং তাঁর মা তাকে গোপনে বর্ণমালা শেখাতেন। কারণ তখন মেয়েদের বিদ্যা শিক্ষা নেওয়া ঘোরতর অপরাধ এবং পাপ হিসেবে বিবেচিত হতো। সেই সময়েই মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা রচনা শুরু করেন৷ তাঁর কবিতা পাঠে বিমোহিত হয়ে সিভিলিয়ান কেদারনাথ বসু তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর স্বামী মারা গেলে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। যা তাঁর কবিতায় প্রকাশ পাওয়া যায়। পঁচিশ বছর বয়সে ১৮৮৯ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আলো ও ছায়া' প্রকাশিত হয়। হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন।

তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথ এবং সংস্কৃত ভাষার প্রভাব বুঝতে পারা যায়। তিনি প্রথম দিকে 'জনৈক বঙ্গমহিলা' ছদ্মনামে লিখালিখি করতেন।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ১৯২৯ সালে 'জগত্তারিণী স্বর্ণপদক' প্রাপ্ত হন

রচনাবলিঃ আলো ও ছায়া, মাল্য ও নির্মাল্য, গুঞ্জন, ঠাকুরমার চিঠি, দীপ ও ধূপ, বালিকা শিক্ষার আদর্শ ইত্যাদি।

তিনি ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার হাজারীবাগে মৃত্যুবরণ করেন।

Tuesday, September 3, 2019

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 


বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নাম। তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, গীতার ব্যাখ্যাদাতা, সাহিত্য সমালোচক, সরকারি কর্মকর্তা, হিন্দু নবজাগরণের অগ্রদূত।

২৭ জুন, ১৮৩৮ সালে চব্বিশ পরগণা জেলার নৈহাটি শহরের নিকটস্থ কাঁঠালপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

পাঁচ বছর বয়সে তাঁর শিক্ষাগ্রহণের হাতেখড়ি হয়। বাল্যকালে তিনি অসামান্য মেধার পরিচয় দেন। মাত্র একদিনেই তিনি বাংলা বর্ণমালা আয়ত্ব করেছিলেন।। শিক্ষাজীবনে তিনি বিভিন্ন বৃত্তি লাভ করেন। ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৮৫৮ সালে প্রথম বি.এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ব্যাচে অংশ নেন দশ জন শিক্ষার্থী৷ তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন মাত্র দুজন। তাঁরা হলেন, বঙ্কিমচন্দ্র এবং যদুনাথ বসু৷  কর্মজীবনে তিনি বৃটিশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর পদে যোগদান করেছিলেন।

কর্মজীবনে অতি নিষ্ঠার সাথে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৮৯১ সালে 'রায় বাহাদুর' এবং ১৮৯৪ সালে 'কম্প্যানিয়ন অফ দ্য দ্য মোস্ট এমিন্যান্ট অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার' খেতাব অর্জন করেছিলেন।

মাত্র ১১ বছর বয়সে ৫ বছরের এক মেয়ের সাথে তাঁর বিয়ে হলেও ১০ বছর পর তার প্রথমা স্ত্রী মারা গেলে পরের বছর তিনি রাজলক্ষ্মী দেবীকে বিয়ে করেন।

১৮৫২ সালে কবিতা লেখার মাধ্যমে সাহিত্য চর্চার শুরু করেন খ্যাতিমান এই লেখক। 'কমলাকান্ত' এই নামকে তিনি ছদ্মনাম হিসেবে পছন্দ করেন। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তাঁর অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম আদি পত্রিকা 'বঙ্গদর্শন'র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।

উল্লেখযোগ্য রচনাবলীঃ দুর্গেশনন্দিনী (এটি লেখকের রচিত এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস) কপালকুণ্ডলা,  আনন্দমঠ, রাজসিংহ, দেবী চৌধুরানী, বৃষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল, Rajmohan's Wife, কৃষ্ণ চরিত্র, ইন্দিরা, যুগলাঙ্গুরীয়, মৃণালিনী, লোকরহস্য, বিজ্ঞান রহস্য, কমলাকান্তের দপ্তর, সহজ ইংরেজি শিক্ষা ইত্যাদি।

১৮৯৪ সালের ৮ এপ্রিল বহুমূত্র রোগ বেড়ে গেলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তথাপি তিনি বাংলা উপন্যাসকে অনেক উঁচু আঙ্গিকে পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন, যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অতি স্মরণীয় হয়ে আছে।

Monday, September 2, 2019

বাংলা একাডেমি 


বাংলা একাডেমির সাথে আমরা কমবেশ সবাই পরিচিত। কারণ এটি একটি ভাষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। বাংলা ভাষায় যে কথা বলি তার প্রমিত রীতি বাংলা একাডেমি কর্তৃক অনুসৃত। এটি ১৯৫৫ সালে ৩ ডিসেম্বর ঢাকার বর্ধমান হাউজে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার। এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার পেছনে অবদান রাখেন ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও চেষ্টা চালায় তবে তা ব্যর্থ হয়৷ বর্তমানে এর মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বাংলা একাডেমির সর্বোচ্চ পদমর্যাদা ফেলো। এর ৪টি বিভাগ রয়েছে। তা হলো-
-গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ
-ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ
-পাঠ্যপুস্তক বিভাগ
-প্রাতিষ্ঠানিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ

এটি ২০১০ সালে সাহিত্য চর্চায় অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক 'স্বাধীনতা পুরস্কার' লাভ করেছিল। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি নিজেও 'বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' প্রদান করে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ। এটি প্রবর্তিত হয় ১৯৬০ সালে। এটি বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা, গ্রন্থ প্রকাশ ও সম্পাদনা, ভাষান্তরকরণ, বাংলা অভিধান, ইংরেজি, উর্দু ভাষার অভিধান রচনাসহ নানাবিধ কাজ করে থাকে। এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলা একাডেমি চত্বরে বইমেলাও অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণসহ সাহিত্য ও শিল্পে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক অবদান রেখে আসছে।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Saturday, August 31, 2019

প্রতীতি

প্রতীতি
     তাসমিয়া জান্নাত
_______________________
আচ্ছা!  তোমরা তো জানো, আমি ভাল। তাই না?
কিন্তু আমি খারাপ হতে চাই।
শোন তবে খারাপ হওয়ার বাসনা।

যদি আমি খারাপ হই তবে অন্তত অন্ধকারগামীদের জন্য আমার অন্তরে আঘাত লাগবে না।
খারাপ আর খারাপের তো হয় না তুলনা।

তমসাবৃত কুঠুরিতে পড়ে থাকতে কেমন লাগে, তা আমি জানতে চাই!

হ্যাঁ, আমি অপ্রকৃষ্ট হব!

সিগারেটের এক একটা টান কি করে দুঃখ ভুলায়, মদের প্রতি ঢোঁকের কি রহস্য তা বুঝতে চাই।

সারারাতব্যাপী জেগে থেকে সারা দিনমান ঘুমিয়ে কাটানো সেই উচ্ছন্ন তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদেরকে বুঝতে চাই।

দিনের রোশনাই যাদের অভিঘাতী, কৃষ্ণাভ কুঠুরি যাদের আত্মীয়, আমি তাদের দলে ভিড়তে চাই।

আমি নিকষকালো গহ্বরে ডুব দিতে চাই!
আমি তাদের কষ্টের শরিকানা হতে চাই!
আমি তাদের সনে আমার বন্ধুত্ব পাতাতে চাই!

তারা অকিঞ্চিৎকর নয়, তারা অনাদেয় নয়।

এ জগদ্বাসী তাদের বুঝে নি, এ সমাজ তাদের পাত্তা দেয় নি!
আজ তাইতো তারা ধোঁয়াশা জগতের বাসিন্দা।
আজ তারা উন্মাদ!

ওহে পৃথিবী!  বুঝতে শেখো তাদের।
ওহে সমাজ! মূল্যায়ন কর তাদের।
ওহে পরিবার!  তাদের সুখের বস্তুকে ছিনিয়ে নিও না।
ওহে পিতা-মাতারা! নিজেদের ইচ্ছা আর জেদকে সন্তানের উপর চাপিয়ে দিও না।

আর কে হবে বিপথগামী?
আর কে হবে হতাশাগ্রস্থ?

নিকোটিনের চাপা অনল আর ভস্মীভূত হবে না।
মদের ঘোরে আর কেউ অপ্রকৃতস্থ হবে না।

প্রাণোচ্ছলতায় ভরপুর হবে গোটা ধরাধাম!

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬ 

এক তমসায়

এক তমসায়....
______তাসমিয়া জান্নাত
_______________________________________
যখন বাড়িতে ছিলাম, তখন তমসাচ্ছন্ন গাছগাছালির ভেতরে একখন্ড রুপালি চাঁদের দেখা মিলতো। অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকতাম। খানিক পরেই সম্বিত ফিরে আসতো।  এতো সুন্দর তারায় ঝলমল আকাশ!! মাঝখানে চাঁদ যেন রাণীর মতো বসে আছে।
আগে একাকি রাতে উঠোনে যেতে ভয় পেতাম। এখন ভয় পাইনা। চাঁদ আর তারাদের সাথেই মিতালী করি। জোনাকি পোকার তেমন দেখা মেলে নি এবারে। তবে ঝিঁ ঝিঁ পোকার গা ছমছমানো আওয়াজ শুনেছি। আমাদের পুকুরে ব্যাঙের গান শুনেছি। যদি একাকি আরো পথ যেতে পারতাম হয় তো আরো কিছু অনুভব করতে পারতাম। কিন্তু একটু পরেই বাবা/মার ডাক পড়তো।  ইশা!!!! রাতে বাইরে কি করস? ভেতরে আয়!!! ব্যস!!! কল্পনার জগত শেষ। অগত্যা সব  ফেলে ভেতরে চলে আসতে হলো।

মিসিং......এখানে এসব কিচ্ছুইই নেই

৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ 

স্মৃতির আয়নায় দুঃসহ এক স্মৃতির প্রতিবিম্ব

স্মৃতির আয়নায় দুঃসহ এক স্মৃতির প্রতিবিম্ব...
_______তাসমিয়া জান্নাত

জীবনের পড়ন্ত এক বিকেলে আমি হিসেব কষতে বসলাম সেই ফেলে আসা দিনগুলির। জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া কিছুর মাঝে হাতড়ে বেড়ালাম একান্ত নিজস্ব কিছুর। দেখলাম, স্মৃতির আয়নায়  ঝাপসা ঝাপসা কোন কিছু। আলতো হাত বুলিয়ে আয়নার ধূলো মুছলাম। দেখি যেন এক জাদুর আয়না। সেই ফেলে আসা দিনগুলি কত সুন্দর ফ্রেমবন্দী হয়ে আছে  আয়নার ভেতরে!! বেলা ডুবার সেই হলুদবর্ণতেও এতটুকু ম্লান হয়ে যায় নি।

আহা! কি মধুর না ছিল সেই সময়!
স্বপ্নালু চোখে সে কি স্বপ্নের বাহার!

আচ্ছা! তুমিও কি আমার মত কখনো বেলা ডুবার কোন এক ক্ষণে স্মৃতির আয়নায় একটিবারের জন্য তাকিয়ে লক্ষ্য করেছ, কি সুন্দর ছিল সেই স্বপ্নমহল?

ঠিক আছে, তুমি হয়তো মাথা নিচু করে আছ আমার প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে। আমিই বরঞ্চ বলে দিই___ নাহ, তুমি কখনো তাকিয়ে দেখ নি সেই মনমাতানো মোহনীয় সৌন্দর্য।

কি জান তো? আকস্মিক তোমার সেই ভালোবাসা পেয়ে আমার দু'চোখে শুধু তুমিই বিরাজমান থাকতে। তোমার অবহেলা, অনাদর পেয়েও এই শূণ্য শুধু তোমাকেই খুঁজে বেড়াতো। আর আমি ডায়েরির পাতায় লিখতাম____
      "এ শূণ্য হৃদয় তোমায় খুঁজে ফিরে
     অবচেতন, তবু চেতনায় এসে ভীড়ে।"

কারণ আমি যে তোমায় সত্যিই হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম, আর বেসেছিও।

অচেনা, অজানা এক স্বপ্নমহলে রাণী হওয়ার সাধ জেগেছিল যে। বুঝতে পারি নি সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী এক তাসের ঘর মাত্র। যা নিমিষেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে।

যাক, জীবন তো থেমে থাকে না। বয়েই চলে নিজস্ব ধারায়।

আর হিসেব মেলাতে পারছি না। চোখ দুটো ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। এই স্মৃতির আয়নায় জমে থাকা ধূলো আমি আর কখনোই মুছতে চাই না। হৃদয় চিলেকোঠার কোন এক কোণে পড়ে থাকুক এই আয়না। যতদিন না মানুষরূপী এ দেহঘরের বিনাশ হয়।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ
_____তাসমিয়া জান্নাত

বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!
তুমি আমার প্রিয় স্বদেশ।
জন্মেছি তোমার কোলে,
বেড়েছি তোমার পরশতলে।
কি শীতল তোমার বাতাস,
নীল রঙিন এক আকাশ।
মন জুড়ানো পাখির গান,
কল কল নদীর কলতান।

সবুজ চাঁদরে ঢাকা মাঠ,
ধুলোমাখা পথ-ঘাট।
স্বর্গীয় এক পরিবেশ,
ভুলে যাই কষ্ট-ক্লেশ।

তুমি এক আশার বাতি,
বিশ্বজুড়ে জুড়ে ছড়াও জ্যোতি।
হও সবে গগনচুমী
তুমিই তো প্রিয় মাতৃভূমি।

একুশের পয়গাম

তাসমিয়া জান্নাত

এসেছে আজ দেখ সবে একুশের পয়গাম
রক্ত-মাখা এই ভাষায় আমার অহংকার
এই ভাষারই নিশান হাতে চলব বারংবার
এই ভাষার তরে নোয়ায় মাথা গোটা ধরাধাম।

তোমরা কেন দাও না সম্মান, রাখ না মান
বাংলা ভাষা, বাংলা মা এইতো আমার সংসার
এই ভাষাতেই বলতে শিখি, এই ভাষা মা'র
এই ভাষা যে সবচে সেরা, দিয়েছি তার প্রমাণ।

ভাষার জন্যে বাংলা সন্তান দিয়েছে তার প্রাণ
শহীদ তারা সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার
জীবন দিয়ে দিয়েছে সুযোগ শির উঁচু করবার
চল সবাই উঠে দাঁড়াই করি তাদের মহীয়ান।

পতাকা

পতাকা তুমি আছ বলেই
বিশ্ব মানচিত্রে ছোট্ট এক বাংলাদেশ,,
পতাকা তুমি আছ বলেই
মনের ভাব প্রকাশে আসে না ক্লেশ।

পতাকা তুমি আছ বলেই
টিকে আছে প্রাণের বাংলাদেশ
পতাকা তুমি আছ বলেই
দুঃখ মাঝে পাই সুখেরই লেশ।

___তাসমিয়া জান্নাত
বাড়ি ফেরা হলো না আমার
নিয়তির বিধানে, জীবনের তাগিদে
থেকে গেছি আমি এই দুঃখ ধরাতে...
মানে না এই মন তবু
শুনে না বারণ কভু সে
যেতে চায় বারে বারে সুখপাড়াতে...

____তাসমিয়া জান্নাত

ইচ্ছে

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
তারাদের মত জ্বলজ্বল করে আলো ছড়াই,,
আবার কখনো বা ইচ্ছে করে
খসে পড়া তারার মত পৃথিবীকে ছেড়ে যাই।
____তাসমিয়া জান্নাত

হৃদয় কথন

অভিলাষী মন
শুনে না তো বারণ
করে যায় স্মরণ, তারে....
   হৃদয়েরই ভার
কমে না তো আর
বেড়ে যায় বারে বারে....

____তাসমিয়া জান্নাত
ক্বলবেরই জুলমাত প্রভু দূর করে দাও
তোমারই নূরে আলোকিত করে দাও,
       প্রভু.....
            জুলমাত দূর করে দাও....

এই জীবনে যত পাপ করেছি আমি
দয়ারই ফাল্গুধারায় মাফ কর অন্তর্যামী
     প্রভু.....
            পাপ করেছি আমি...

শয়তানেরই ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচাও
তোমার রহমতেরই ধারায় ভাসাও,
     প্রভু......
         ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচাও...

পরকালে জান্নাত হয় যেন ঠিকানা
চাই না কিছু আর, এটাই শুধু কামনা,
      প্রভু......
         জান্নাত যেন হয় ঠিকানা...

তাসমিয়া জান্নাত

Friday, August 30, 2019

Wednesday, August 28, 2019

লক্ষ্যপানে

_______তাসমিয়া জান্নাত


ভাবো, তুমি একাই একশো
ভাবো, তুমি পারবেই,
হাল ছেড়ো না বন্ধু
নতুন ভোর তো আসবেই।

চিত্তে রাখো হিম্মত
বুকে রাখ বল,
হেরে যেতে পারো না
হবেই তুমি সফল।

অন্ধকার পেরিয়ে যাও
আসবেই তো আলোর রেখা,
মিছেমিছি ভয় কেন তবে
ভীরুতাকে দাও ছ্যাঁকা।

কত মহামানব আছে এমন
হেরেছেন বহুবার,
দমাতে পারে নি কেউ
মানে নি তবু হার।

ব্যর্থতায় ভীত না হয়ে
ঘুরে দাঁড়াও এবার,
হয়তো এটাই হবে
প্রতীক সফলতার।

নিজেকে ক্ষুদ্র না ভেবে
সাহস রাখ প্রতিভার,
কেউ যে ছোট নয়
ভয় কেন সংকীর্ণতার?

গর্জে ওঠো স্বহস্তে
ভয় পাই না কো আর,
আমার মাঝে আমি'র বাস
লক্ষ প্রাণের সঞ্চার।

নাম দিলাম তোমায়
তুমি জিৎ বা জয়ীতা,
রুখবেই তুমি যত আছে
ভীরুতা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

লক্ষ্য তোমার একটাই__ সফলতা।

সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৬ 

Tuesday, August 27, 2019

মেয়েটি এবং ছেলেটি
___সুবোধ সরকার

মেয়েটা এবং ছেলেটা একদিন বাড়ি থেকে পালালো
তারা আপাতত একটি অরণ্যের ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু সারা শহরে ছেলেটির বাবা খুঁজে বেড়াচ্ছে মেয়েটির বাবাকে
ছেলেটির মা খুঁজে বেড়াচ্ছে মেয়েটির মাকে
ছেলেটির দাদা খুঁজে বেড়াচ্ছে মেয়েটির দাদাকে
একটা কিছু হবে। কোনও একজনের লাশ পড়বে।
ওদিকে ছেলেটি আর মেয়েটি একটি গহন অরণ্যের ভেতর।
ছেলেটি মেয়েটিকে চুম্বন করছে
আপাতত মেয়েটির নাম আত্মহারা
ছেলেটির নাম উদভ্রান্ত।
কিন্তু সারা শহর ছেলেটির বাবা
খুঁজে বেড়াচ্ছে মেয়েটির বাবাকে
সত্যি সত্যি তাদের দেখা হয়ে গেল একদিন
দুই বাবার সংলাপ:
: আপনার মেয়েটি একটা জিনিস
: আপনার ছেলেটি একটা বাঁদর
: আপনার মেয়েটি একটা চিড়িয়া
: আপনার ছেলেটি একটা নকশাল

ওদিকে বিহার উড়িষ্যা ছাড়িয়ে ওরা তখন অন্ধ্রের দিকে
ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরল
মেয়েটি ছেলেটির কোমর ধরল।
তরপর তিনদিন তিনটে বাংলা কাগজে স্টোরি
কীভাবে তারা পালিয়েছে, কোন কলেজে পড়ে
মেয়েটির চরিত্র কেমন, ছেলেটিকে লোকাল কমিটি ডেকেছিল কেন
কিন্তু ওরা তখন অন্ধ্রপ্রদেশের সূর্যাস্ত দেখেছে।
বাবা-মা, থানা-পুলিশ এবং সংবাদপত্র
আপনারা পারেন কিন্তু, অসীম আপনাদের ক্ষমতা
পৃথিবীর কোথাও যখন কোনও ভালোবাসা নেই
দিন না, ছেলেমেয়ে দুটোকে একটু ভালোবাসতে।

Monday, August 26, 2019

তুই কি আমার দুঃখ হবি?
কবিঃ আনিসুল হক
কবিতা পাঠঃ তাসমিয়া জান্নাত

Sunday, August 25, 2019

বাংলাদেশের রপ্তানি খাত 


রপ্তানি শব্দের অর্থ হল- বিক্রয়ের জন্য পণ্যদ্রব্য বিদেশে প্রেরণ।

১৯৭২ সাল থেকেই বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি করে আসছে। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৪৮.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; যার সিংহ ভাগ (৯০%) আসত পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে। তৎকালীন অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে অন্যতম ছিল চা শিল্প ও চামড়া শিল্প। পরবর্তী চার দশকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছানোর পেছনে প্রধান খাত হলো তৈরি পোশাক শিল্প। মোট জিডিপির প্রায় ২০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। এর বড় বাজার হলো যুক্তরাষ্ট্র। অন্যান্য সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত হলো ওষুধ শিল্প। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ দেশের ৯৮% চাহিদা পূরণ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ওষুধ রপ্তানির প্রবৃদ্ধি গড়ে ১৫%। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ বিশ্বের অনুন্নত ৪৮টি দেশের মধ্যে ওষুধ উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে। এছাড়াও আছে  হিমায়িত ও কাঁচা মাছ, যার চাহিদা বিশ্বে প্রচুর। আরো আছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবাখাত। ২০১৮ সালে এই খাত থেকে আয় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বেসিস (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব  সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস) এবং সফটওয়্যার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এই খাত বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ১৫ টি রপ্তানি খাতের একটি। রপ্তানি খাতের মধ্যে আরো আছে আরো আছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ইত্যাদি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত থেকে মোট আয় হয়েছে ১৭৯২ কোটি মার্কিন ডলার বা ৯৫.৮৪ শতাংশ।

মূলত রপ্তানি খাতই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। আর যে দেশের রপ্তানি খাত যত বেশি ও যত উন্নত সেই দেশ অর্থনৈতিক ভাবে ততবেশি শক্তিশালী।

ধন্যবাদ সবাইকে।

মায়ের কাছে খোলাচিঠি

______তাসমিয়া জান্নাত


মা,
কেমন আছ, মা? জানো মা, আমি এখানে ভালো নেই! 
মা- 
তোমার কথা যখন মনে পড়ে-
বুকটা হুঁ হুঁ করে কেঁদে ওঠে!
বুকফাটা আর্তনাদে যেন_
তোমার রান্নাঘরের শুকনো পাতারাও কাঁদে মর্মর ধ্বনি করে!
গাছেরাও যেন নির্বাক, ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে!

ও-মা! 
সেই যে ঘর থেকে বেরিয়েছি, সেই থেকেই আমি যেন পরবাসী,
নিজের ঘরে আমি যেন অতিথিরূপে আসি।
কিছুদিন যেতে না যেতেই ফিরতে হয় আমায়, আবার কোলাহলময়ী ব্যস্ততায়!

উঠুনে চেয়ারে বসে বই পড়া, 
হিম-শীতল বাতাসের দোল খাওয়া অথবা বিলে-ঝিলে, বন-বাদাড়ে ঘুরে ঘুরে প্রকৃতিকে ক্যামেরাবন্দি করা, অথবা ছোট ভাইগুলোর সাথে দুষ্টুমি করা, কিছুই তো পারি না এখন।

কংক্রিটের দেয়ালে যেন আবদ্ধ আমি!

তোমার রান্না করা খাবার, হোক না সেটা লবণ-ভাত যেন গোগ্রাসে খেতে পারি।
এখানের দামি দামি খাবারগুলো যে আমার পেট ভরায় না।
মনে হয় খেয়েও উপোস আমি।

মা, এই দূর শহরে সবই যে লৌকিকতার প্রদর্শনী!
মায়া-মমতা, আদর-সোহাগ, সম্মান-মর্যাদা সব যে অর্থবন্দি!

আমি চাই নির্মলতা,
আমি চাই ধূলোমাখা হাতের পরশ পেতে_
আমি চাই আদুরে ভরা সেই বকুনি!

পাব কি? কবে ফিরব তোমার কাছে?
চিরতরে_
আদৌ কি ফিরতে পারব?

মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে_ হয়তো এই যাত্রায় আর তোমার কাছে আমার ফেরা হলো না!
ভালো থেকো মা! আল্লাহ হাফেজ।

                           ইতি
                       তোমারই স্নেহধন্যা মেয়ে

চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ


Saturday, August 24, 2019

আইটি এনাবেল্ড সার্ভিসেস


আইটি এনাবেল্ড সার্ভিসেস (ITES) আইটি (IT) এর সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়৷ যা Outsourcing process হিসেবে পরিচিত। এটি আগে IndoNet হিসেবে পরিচিত ছিল।

বর্তমান যুগ ইন্টারনেট ও প্রতিযোগিতার যুগ। এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে ব্যবসাকে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক করতে হবে। কারণ ব্যবসায় মুনাফা সর্বোচ্চ করতে হলে তার ব্যয় সর্বনিম্ন করতে হবে৷ অন্যথা পণ্য/সেবার ব্যয় খরচ বাড়লে একক প্রতি মুনাফা হ্রাস পাবে। ফলে পণ্যের গুণগত মান খারাপ করে ব্যবসায়িক ধ্বস বন্ধ করতে হবে। আর এই ব্যয়কে সর্বনিম্ন এবং পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখা যায় আইটি এনাবেল্ড সার্ভিস গ্রহণের মাধ্যমে। এটি এইচআর, প্রশাসন, স্বাস্থ্যসেবা, টেলিযোগাযোগ, উৎপাদন ইত্যাদিকে প্রযুক্তি ও জনশক্তি দ্বারা পরিচালিত করে।
এটি ই-কমার্সের সাথেও সম্পর্কযুক্ত । কারণ এই পরিষেবাগুলোর লক্ষ্য হলো B2B এর সমস্যার সমাধান করা।

এর মূল লক্ষ্যই হলো_ একটি ব্যবসায়ের কৌশলকে উন্নত করা এবং ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করা।

ITES এর মধ্যে রয়েছে_
. মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশন
. ডক্যুমেন্টস প্রসেসিং
. ডেটা এন্ট্রি এবং প্রসেসিং
. তথ্য সংরক্ষণ করা
. আইটি সহায়তা কেন্দ্র
. অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
. নতুন উদ্যোগের পরিকল্পনা
. টেলিযোগাযোগ সেবাসমূহ
. বিল পরিশোধ ইত্যাদি৷

অর্থাৎ তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমগুলোই হলো আইটি এনাবেল্ড সার্ভিসেস।

Friday, August 23, 2019


বিষয়ঃ স্যার ডন ব্রাডম্যান


পূর্ণনাম স্যার ডোনাল্ট ব্রাডম্যান, "দ্যা ডন, দ্যা বয় ফ্রম বাউরাল, ব্রাড্ডেলস" নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯০৮ সালের ২৭ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের বাউরালে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয়। তিনি ২৩৪ টি প্রথম শ্রেণির খেলায় ৯৫.১৪ গড়ে ২৮০৬৭ রান এবং ৫২ টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৬৯৯৬ রান করেন। তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের গড় ব্যাটিং রেট ৯৯.৯৪, যা যে কোনো বড় খেলায় সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে ধরা হয়।

তিনি বহু সম্মাননা অর্জন করেন। ১৯৪৯ সালে তাঁকে সম্মানসূচক 'নাইটহুড' উপাধি প্রদান করা হয়। তিনি  উইজডেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারের পুরস্কারটি একাই দশবার এবং গ্যারি সোবার্স আটবার লাভ করেছিলেন। এছাড়া, অন্য কোন খেলোয়াড়ই তিনবারের বেশি লাভ করতে পারেননি। ২০০০ সালে শতাব্দীর সেরা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড দলে তাঁকে অধিনায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২০০১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৯২ বছর বয়সে ক্রিকেটীয় এই কিংবদন্তির শারিরীক মৃত্যু ঘটলেও তাঁর কৃতিত্ব হয়েছে অমর।

ধন্যবাদ সবাইকে।
SachinTendulker

বিষয়ঃ শচীন টেন্ডুলকার 


শচীন টেন্ডুলকার, যাঁর পূর্ণ নাম শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। তিনি ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল ইন্ডিয়ার মুম্বাইয়ের মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ইন্ডিয়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এবং ইন্ডিয়া জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি একজন ডানহাতী ব্যাটসম্যান। তিনি লিটল মাস্টার বা মাস্টার ব্লাস্টার হিসেবে পরিচিত। তিনি ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি সর্বোচ্চ রানের অধিকারী ব্যক্তিত্ব।

১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর তাঁর মাত্র ষোলো বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় এবং এরপর থেকে প্রায় চব্বিশ বছর তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেন।

তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান যাঁর ১০০টি আন্তজার্তিক সেঞ্চুরি রয়েছে এবং ODI ম্যাচে সর্বপ্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তিনি আন্তজার্তিক ক্রিকেটে ৩০,০০০ এরও বেশি রান করা একমাত্র খেলোয়াড়। তিনি ODI ম্যাচে ১০০০০ রান পূর্ণ করা প্রথম ব্যাটসম্যান। তিনি ২০১৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে আইসিসির পক্ষ থেকে শচীনকে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি প্রদান করা হয়। ২০১২ সালে তিনি রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত হন। শচীন প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড়, যাকে ভারতীয় বিমানবাহিনী মর্যাদাসূচক ক্যাপ্টেন পদ প্রদান করে।

তিনি অর্জুন পুরস্কার, রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কার, পদ্মশ্রী পুরস্কার, পদ্মবিভূষণ পুরস্কারসহ অসংখ্য দেশীয় ও আন্তজার্তিক সম্মাননা অর্জন করেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

স্মৃতির আয়নায় দুঃসহ এক স্মৃতির প্রতিবিম্ব...

তাসমিয়া জান্নাত 

________________________________
জীবনের পড়ন্ত এক বিকেলে আমি হিসেব কষতে বসলাম সেই ফেলে আসা দিনগুলির। জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া কিছুর মাঝে হাতড়ে বেড়ালাম একান্ত নিজস্ব কিছুর। দেখলাম, স্মৃতির আয়নায়  ঝাপসা ঝাপসা কোন কিছু। আলতো হাত বুলিয়ে আয়নার ধূলো মুছলাম। দেখি যেন এক জাদুর আয়না। সেই ফেলে আসা দিনগুলি কত সুন্দর ফ্রেমবন্দী হয়ে আছে  আয়নার ভেতরে!! বেলা ডুবার সেই হলুদবর্ণতেও এতটুকু ম্লান হয়ে যায় নি।
আহা! কি মধুর না ছিল সেই সময়!
স্বপ্নালু চোখে সে কি স্বপ্নের বাহার!
আচ্ছা! তুমিও কি আমার মত কখনো বেলা ডুবার কোন এক ক্ষণে স্মৃতির আয়নায় একটিবারের জন্য তাকিয়ে লক্ষ্য করেছ, কি সুন্দর ছিল সেই স্বপ্নমহল?
ঠিক আছে, তুমি হয়তো মাথা নিচু করে আছ আমার প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে। আমিই বরঞ্চ বলে দিই___ নাহ, তুমি কখনো তাকিয়ে দেখ নি সেই মনমাতানো মোহনীয় সৌন্দর্য।
কি জান তো? আকস্মিক তোমার সেই ভালোবাসা পেয়ে আমার দু'চোখে শুধু তুমিই বিরাজমান থাকতে। তোমার অবহেলা, অনাদর পেয়েও এই শূণ্য শুধু তোমাকেই খুঁজে বেড়াতো। আর আমি ডায়েরির পাতায় লিখতাম____
      "এ শূণ্য হৃদয় তোমায় খুঁজে ফিরে
     অবচেতন, তবু চেতনায় এসে ভীড়ে।"
কারণ আমি যে তোমায় সত্যিই হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম, আর বেসেছিও।
অচেনা, অজানা এক স্বপ্নমহলে রাণী হওয়ার সাধ জেগেছিল যে। বুঝতে পারি নি সেটা ছিল ক্ষণস্থায়ী এক তাসের ঘর মাত্র। যা নিমিষেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে।

যাক, জীবন তো থেমে থাকে না। বয়েই চলে নিজস্ব ধারায়।
আর হিসেব মেলাতে পারছি না। চোখ দুটো ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। এই স্মৃতির আয়নায় জমে থাকা ধূলো আমি আর কখনোই মুছতে চাই না। হৃদয় চিলেকোঠার কোন এক কোণে পড়ে থাকুক এই আয়না। যতদিন না মানুষরূপী এ দেহঘরের বিনাশ হয়।


চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম


পুনরুজ্জীবনী বার্তা

তাসমিয়া জান্নাত

  শিক্ষার্থী: চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ


তোর লক্ষ্যটা ঠিক অন্য ছিল!
তোর স্বপ্নগুলো পূরণ হওয়ারই ছিল।
তুই তো তার যোগ্যই ছিলি!
তোর ইচ্ছেগুলো বেশ ঝলমলে ছিল।
তোর ওপর তোর অনেক আস্থা ছিল।
কিন্তু ঠিকঠাক থাকা জীবনের এই চলতি পথে কী হয়ে গেল??
জানিস না তো!! কিছুই বুঝিস না তুই?
নাকি তুই তা বুঝতেই চাস না?
আরে!! ভুলটা তো তুই-ই করেছিস!
তো, সেই ভুলের মাশুল কি তুই দু'চোখ দিয়ে ঝরাবি না?
ভুল যখন করেছিস, সেই ভুলের মাশুল তো তোকে গুণতেই হবে। 
কর্মফল বলেও তো কিছু একটা আছে, নাকি?
কাঁদিস না বোকা মন! শুধু কি কাঁদলেই জীবন চলবে?
কত কাজ পড়ে আছে বলতো?
তোকে তো নিজের একটা জায়গা তৈরি করে নিতে হবে? হাল ছাড়লে চলবে?
এখন তোর যে অবস্থা, তা থেকে তো তোর পরিত্রাণ পাবার কথা না! 
যখন পরিত্রাণ পাবিই না, তখন তা নিয়ে অযথা ভেবে আজকের দিনটা মাটি করছিস কেন বলতো?
একটাইতো জীবন! এই জীবনেই তো তোকে বাঁচার মত বাঁচতে হবে। মরার আগেই তুই মরে গেলি??
জীবনে চলার পথ বন্ধুরই হয়। আলো-আঁধারির মিশেল তো থাকে পুরো জীবন জুড়ে।
তুই এখন জীবনের একটা বাঁক অন্ধকারেই দাঁড়িয়ে আছিস! 
তুই কি আলোর সন্ধান করবি না? এটা তো হয় না!
রাতের নিকষ কালো আঁধার ফুঁড়েই তো বেরোয় পুবের ঐ সোনালি প্রভা। 
ভাবিস না তুই!
জীবন কখনও ব্যর্থ হয় না। 
শুধু তোকে খুঁজে নিতে হবে প্রাণপণে.... তোর জীবনের উজ্জ্বল প্রদীপ শিখা কিসের আড়ালে জ্বলজ্বল করছে?

বিষয়ঃ ব্যাংক লোন


ঋণ ব্যবস্থা ল্যাটিন শব্দ ‘ক্রেডে’ (সংস্কৃত-ল্যাটিন ক্রাড) থেকে উদ্ভূত। ইংরেজি 'ক্রেডিট' বা 'লোন' শব্দটি অর্থনীতিতে ঋণ বোঝালেও এর অর্থ আসলে কোনো এক জনের (সংস্থার) প্রতি অন্যের আস্থা। ঋণ বা ধার অর্থে ক্রেডিট হচ্ছে পরে মূল্য ফেরত পাওয়া যাবে এ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে অর্থ বা পণ্য দিয়ে দেওয়া (বিক্রয় করা)। অধিকাংশ ঋণই বস্তুত আর্থিক ঋণ, যাতে পাওনাদার প্রথমে দেনাদারকে কোনো একটি পরিমাণ অর্থ ধার দেয় এবং পরবর্তী সময়ে  সুদসহ প্রদত্ত অর্থ ফেরত আদায় করে। আবার ক্রেডিট শব্দটি ঋণের পাশাপাশি ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধ ক্ষমতাও বোঝায়।

Oxford Dictionary of Business এ বলা হয়েছে,  Bank loan/advance is a specific sum of money lent by a bank to customer. ( ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহককে নির্দিষ্ট অর্থ ধার দেয়াকে ব্যাংক লোন বা অগ্রিম বলে।)

অর্থাৎ, মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যাংক গ্রাহককে যে আর্থিক সুবিধা, সুনাম ও বিশ্বাস ধার প্রদান করে তাকে ব্যাংক ঋণ বলা হয়৷

একটি ব্যাংক লোন মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদী অর্থ সরবরাহ করে। ব্যাংক নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে যার উপরে লোন সরবরাহ করা হয় (উদাঃ ৩, ৫ বা ১০ বছর) সুদের হার এবং পরিশোধের সময় এবং পরিমাণ ইত্যাদিও বিবেচিত হয়।

ঋণদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত কিছু নীতিমালা রয়েছে। যেমনঃ
১. বর্তমান ও ভবিষ্যতে তারল্য সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঋণ প্রদান করা।
২. ঋণ পরিশোধে ঋণগ্রহীতার সচ্চলতা কতটুকু, তার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করা।
৩. যে পদ্ধতিতে এবং যে খাতে ঋণ প্রদান করা হলে সর্বাধিক নিরাপত্তা রক্ষা করা সম্ভব হয়, তার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করা।
৪. আর্থিকভাবে সৎ ব্যক্তিকে ঋণ প্রদান করা।
৫. যে কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ঋণ প্রদান না করা।
৬. যে খাতে সর্বনিম্ন ব্যয়ে সর্বাধিক মুনাফা অর্জিত হয়, সেই ক্ষেত্রেই ঋণ প্রদান করা।
৭. ঋণ ফেরতের নিশ্চয়তা স্বরূপ ব্যাংক ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জামানত হিসেবে গ্রহণ করে। যে জামানত অধিক মূল্যবান ও সহজে নগদ অর্থে রূপান্তরযোগ্য তার বিপরীতে ঋণ প্রদান করা।
৮. ঋণগ্রহীতার ঋণ ব্যবহার ক্ষমতা কতটুকু তার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান করা।
৯. ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার মেয়াদ কত, তার ভিত্তিতে ঋণ দেওয়া।
১০. জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থি কোনো খাতে ঋণ প্রদান না করা।

তিনটি ভিত্তির উপর ব্যাংক ঋণকে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। যেমনঃ
ক) প্রকৃতি ভিত্তিক
এটি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। যেমনঃ
১. তহবিল ঋণঃ ব্যাংক নিজস্ব তহবিল হতে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে যে ঋণ প্রদান করে তাকে তহবিল ঋণ বলে। এটি তিন ধরণের হতে পারে। ধার, নগদ ঋণ এবং জমাতিরিক্ত ঋণ।

২. দালিলিক ঋণঃ মূল্যবান দলিলপত্র ইস্যু, হস্তান্তর ও প্রত্যয়নের মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহককে ঋণ প্রদান করে। এটা দুই ধরণের।

★বাণিজ্যিক দালিলিক ঋণঃ ব্যবসায় বাণিজ্যে দলিল ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহককে যে ঋণ সহায়তা প্রদান করে তাকে বাণিজ্যিক দালিলিক ঋণ বলে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত দলীলগুলো হলো_
. ব্যাংক ড্রাফট বা আজ্ঞাপত্র
. পে-অর্ডার
. ব্যাংক গ্যারান্টি
. ক্রেডিট কার্ড

★অবাণিজ্যিক দালিলিক ঋণঃ বাণিজ্য বহির্ভূত খাতে দলিলপত্র ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংক যে ঋণ সুবিধা প্রদান তাকে অবাণিজ্যিক দালিলিক ঋণ বলে। এই অবাণিজ্যিক দলীলগুলো হলোঃ
. ভ্রাম্যমাণ নোট
. ভ্রমণকারীর চেক
. ভ্রমণকারীর প্রত্যয়ন পত্র
. ক্রেডিট কার্ড

খ) উদ্দেশ্য ভিত্তিক ঋণঃ এটা দু'ধরণের। যথাঃ
১. বাণিজ্যিক ঋণঃ বাণিজ্যিক খাতে ব্যাংক যে ঋণ প্রদান করে তাকে বাণিজ্যিক ঋণ বলা হয়।
২. অবাণিজ্যিক ঋণঃ ব্যবসায় বাণিজ্য বহির্ভূত খাতে ব্যাংক যে ঋণ দেয় তাকে অবাণিজ্যিক ঋণ বলে।

গ) মেয়াদ ভিত্তিকঃ সময়ের ভিত্তিতে ঋণ ৩ ধরণের। যেমনঃ
১. স্বল্পমেয়াদী ঋণঃ কয়েক ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর মেয়াদী ঋণ। এটা দু'প্রকার। চাহিবামাত্র দেয় ঋণ এবং স্বল্প নোটিশে দেয় ঋণ।
২. মধ্যমেয়াদী ঋণঃ সর্বনিম্ন ১ বছর ও সর্বোচ্চ ৫ বছর মেয়াদী ঋণ। এক্ষেত্রে সুদ বেশি এবং ব্যাংক জামানত গ্রহণ করে।
৩. দীর্ঘমেয়াদি ঋণঃ ৫ বছর বা তদূর্ধ্ব সময়ের জন্য এ ঋণ দেওয়া হয়। সাধারণত বন্ধকী ব্যাংক গৃহনির্মাণ, শিল্পকারখানা স্থাপন প্রভৃতি খাতে এ ঋণ প্রদান করে।

আধুনিক বাণিজ্যের যুগে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ব্যবসায়-বাণিজ্যের গতিশীলতা বৃদ্ধিতে ব্যাংক ঋণের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে গ্রাহকগণ ব্যবসায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারে। এমনকি উন্নত উপায়ে একে সাজাতে পারে।  অভ্যন্তরীণ ব্যবসায় উন্নয়ন, শিল্পায়ন, মূলধনের যোগান, কৃষি উন্নয়ন, বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Wednesday, August 21, 2019

স্বপ্নদের স্বপ্নভঙ্গ 

স্বপ্নদের স্বপ্নভঙ্গ তাসমিয়া জান্নাত


দু'চোখে রাশি রাশি স্বপ্নের জলচিত্র
নোটবুকে আমার স্বপ্নের আঁকিবুঁকি
আমার কক্ষজুড়ে স্বপ্নদের ছুটোছুটি
যেন চলছে এক স্বপ্নমুখর চলচ্চিত্র বিকাশন....

আছে তবু বিষাদের নীলাম্বর জড়ানো প্রতিচিত্র
প্রতিক্ষণে স্বপ্নরা দিয়ে যাচ্ছে জলাঞ্জলি 
স্বপ্নময় স্বপ্নকুঠুরীতে দুঃস্বপ্নের চোরাবালি
যেন হচ্ছে একে একে স্বপ্নদের সমাহিতকরণ...

MakeMoneyViaOnlineঅনলাইনে টাকা ইনকাম করা


বর্তমান যুগ ইন্টারনেটের যুগ। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আজ মানুষ বিশ্ব দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। কাজী নজরুল যেমন বলেছিলেন...."বিশ্ব জগৎ দেখবো আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে"।

ইন্টারনেট যতটা আমাদের এগিয়ে দিয়েছে ততটাই আবার পিছিয়ে দিয়েছে। কারণ, তথ্যপ্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে আমরা নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারছি না। অর্থাৎ ইন্টারনেট চালনায় পারদর্শী হলে আমরা ইন্টারনেটকে ব্যবহার করেই নিজেদের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবো৷ এতে বেকার সমস্যার সমাধান হবে। আসলেই ইন্টারনেটে আয় করা যায়। শুনতে অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই সত্যি। যুগ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ায় সবকিছুই এখন অনলাইন কেন্দ্রীক। ফলে এখানে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে যেহেতু সশরীরে কাজ সম্পাদিত হয় না, তাই প্রতারিত হবার সম্ভাবনাটাও প্রবল। তাই বুঝেশুনে কাজ করতে হবে।

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য কতগুলো বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। যেমনঃ

১. সময়োপযোগী কাজে দক্ষ হতে হবে।
২. কাজে নিয়মিত থাকতে হবে।
৩. নির্দিষ্ট একটা কাজ করতে হবে। কাজ বারবার  বদলালে কোনো কাজেই স্থায়ী দক্ষ হয়ে উঠা সম্ভব হয় না।
৪. প্রথমদিকে ইনকামের চিন্তা দূর করতে হবে।
৫. বাংলা ও ইংরেজি উভয়দিকে বলা এবং লিখার যোগ্যতা থাকতে হবে।
৬. কম্পিউটার পরিচালনায় পারদর্শী হতে হবে।
৭. সঠিক ক্লায়েন্ট কে তা বুঝতে হবে। নাহলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এবার আসি, অনলাইনের মাধ্যমে কোন ধরণের কাজ করা যায় এবং কীভাবে?

১. ফ্রিল্যান্সিংঃ

অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা যায়। যে এই কাজ করে তাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের কোম্পানি কর্তৃক কাজের অফার দেওয়া হয়। তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।  এক্ষেত্রে নিজের মতো কাজ করা যায়। যার যে কাজে দক্ষতা আছে সেই অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে আবেদন করতে হয়। দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পাওয়া যায়। যার কাজ যত নিপূণ হবে সে ততবেশি কাজের অফার পাবে এবং ইনকামও ততবেশি হবে।

২. নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরিঃ

ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে তা কন্টেন্ট অনুপাতে সাজিয়ে তাতে নিয়মিত কন্টেন্ট লিখে জনপ্রিয় করতে পারলে গুগল অ্যাডসেন্সে আবেদন করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে Advertisements প্রদর্শিত হলে ইনকাম পাওয়া যায়।

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ

বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এতে অ্যাকাউন্ট খুললে বিভিন্ন পণ্যের নিজস্ব কিছু লিংক পাওয়া যায়। তা বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে শেয়ার করলে ঐ লিংক থেকে যতবেশি বিক্রি হবে নির্দিষ্ট অনুপাতে ততবেশি ইনকাম পাওয়া যাবে।

৪. জরিপ, রিসার্চ ও রিভিউঃ

অনলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরণের জরিপ পরিচালনা, মার্কেট রিসার্চ এবং বুক রিভিউ প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়।

৫. ভার্চ্যুয়াল সহকারীঃ

ঘরে বসেই বিভিন্ন কোম্পানীর হয়ে ভার্চ্যুয়াল সহকারী হিসেবে কাজ করা যায়। এতে অনলাইনে যেসকল কাজ করতে হয় তাতে সহায়তা করা হয়। এর মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়। এই কাজ পাওয়ার কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে। যেমনঃ HireMyMom, MyTasker, Zirtual, uAssistMe, 123Employee ইত্যাদি।

৬. অনুবাদঃ

বিভিন্ন ভিন্ন ভাষার কন্টেন্ট অন্য ভাষায় অনুবাদের প্রয়োজন পড়ে। এর মাধ্যমেও অনুবাদক ইনকামের সুযোগ পায়।

৭. অনলাইন টিউটরঃ

অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারলে অনলাইন বিভিন্ন সাইট থেকে আপনাকে 'hire' করতে পারে। ফলে এক্সট্রা ইনকামের সুযোগ হয়। যেমনঃ 10 Minute School এ বিভিন্ন বিষয় বিভিন্ন জন ক্লাস নিয়ে থাকেন।

৮. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমঃ

ফেসবুক, টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি এখন শুধুমাত্র বিনোদন নয়, ইনকামেরও মাধ্যম। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বা সেবাকে প্রমোট করার মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।

৯. গ্রাফিক্স ও ওয়েব ডিজাইনঃ

বিভিন্ন কোম্পানির লোগো, ভিজিটিং কার্ড তৈরি, ওয়েবসাইট ডিজাইন করে দেওয়ার মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়।

১০. কন্টেন্ট রাইটিংঃ

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখার মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়। যাদের লিখালিখির অভ্যাস আছে এবং যারা দুই/তিনটি ভাষায় সাবলীলভাবে লিখতে পারেন তারা এই সাইটকে কাজে লাগাতে পারেন৷  এই ইনকাম সাইটের কিছু ওয়েবসাইট আছে। যেমনঃ Elance, iWriter, WriterBay, FreelanceWriting, TextBroker, ExpressWtiters.com, FreelanceWritingGigs.com ইত্যাদি।

১১. ব্লগিংঃ

ব্লগিং একটি মুক্তপেশা। নিজের পছন্দনীয় মৌলিক লিখার মাধ্যমে নিজের ব্লগকে জনপ্রিয় করতে পারলে গুগল অ্যাডসেন্সের শর্ত পূরণ করে ইনকামের জন্য আবেদন করা যায়।

১২. ইউটিউবঃ

নিজের তৈরিকৃত ভিডিও নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার মাধ্যমে ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করতে পারলে অ্যাড এবং ভিউয়ের মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।

১৩. পিটিসিঃ

অনেক ওয়েবসাইট আছে যাতে রাখা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে অর্থ প্রদান করা হয়। এই ধরণের সাইটকে পিটিসি বলা হয়।

১৪. জিপিটিঃ

ছোট ছোট জরিপ, ভিডিও দেখা, গেম খেলা ইত্যাদি আরো অনেক কাজের মাধ্যমে এই সাইট থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়।

১৫. ডেটা এন্ট্রিঃ

এটি সবথেকে সহজ কাজ। এবং ইনকামও খুব কম। তবে যারা মোটামুটি কম্পিউটার টাইপিং জানে তারা বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে ডেটা এন্ট্রির কাজ করতে পারে। তবে এক কাজে দক্ষ হলে কাজের অভাব হবে না।

১৬. Short Link Website থেকে আয়ঃ

এর জন্য Short Link ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে৷ কিছু ওয়েবসাইটের নাম হলোঃ Shorte.st, adf.ly, AL.LY, Blv.me, LinkShrink.Net ইত্যাদি।  এর কাজ হলো - ইন্টারনেট থেকে যে কোনো ওয়েবসাইটের URL address কপি করে তাকে URL shortener website গুলোর মাধ্যমে ছোট করতে হয়। অর্থাৎ এই লিংকের মাধ্যমে কার ওয়েবসাইট সেটা বুঝা যাবে না। আর এই ছোট লিংকে কিছু advertisements জুড়ে দেওয়া হয়, যা ক্লিক করলে মূল ওয়েবসাইটে যাওয়ার পূর্বে  প্রদর্শিত হয়। তখন Link Shortener website থেকে ১০০০ ভিউতে ৫ থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত ইনকাম দেওয়া হয়৷

১৭. OLX & QUIKR - এ পুরনো জিনিস বিক্রি করে আয়ঃ

OLX এবং QUIKR এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেকোনো ব্যবহারযোগ্য পুরনো জিনসের ছবি তুলে এবং পণ্যের বিবরণ লিখে আপলোড করে তা বিক্রির করে ইনকাম করা যায়।

১৮. Android App থেকে আয়ঃ

Google Play Store থেকে Earning Apps, Online Income app বা free recharge app লিখে সার্চ করলেই কিছু অ্যাপ আসবে যা অ্যাপ ডাউনলোড, অ্যাপ রেফার করা, রিভিউ লিখা ইত্যাদি কাজেএ জন্য টাকা দেয়। কিছু Best app হলো-- Truebalance, Mcent, Amulyam, Pocket Money, TasK Bucks ইত্যাদি

১৯. অনলাইনে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে আয়ঃ

Math, English, Physics, Biology Humanities ---ইত্যাদিতে প্রশ্নোত্তর প্রদানের মাধ্যমে ইন্টারনেটে অন্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেওয়া যায়। যদি সঠিক উত্তর দেওয়া যায় তবে ইন্টারনেটে অনেকগুলো সাইট আছে যেগুলো তাদের সাইটে জয়েন করার জন্য যোগাযোগ করবে। সেখানে জয়েন করার মাধ্যমে ওই কোম্পানি থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।

২০. ইভেন্টের প্রচারণাঃ

কোনো ইভেন্ট কতৃপক্ষের হয়ে অনলাইনে নিবন্ধন এবং তথ্য সরবরাহের কাজ করার মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়।

২১. ইন্টারনেট সার্ভে করে আয়ঃ


একটি কোম্পানির অগ্রগতির জন্য তাদের সম্পর্কে ক্রেতা ও সাধারণ মানুষ কী ভাবছে এটা জানা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। এর ফলে একদিকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ ত্রুটিগুলো শুধরে নেয়া যায়, অন্যদিকে পণ্য বা সেবার বিক্রি বেড়ে যায় বহুগুণে। এ জন্য এসব কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায় থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মতামত পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সার্ভে করিয়ে থাকে।
আর এটাও অনলাইনে ইনকামের একটা উৎস।

২২. গুগল অ্যাডসেন্সঃ

বিভিন্ন কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় তাদের পণ্য/সেবা ও কার্যক্রমের তথ্য পৌঁছে দিতে চায়, আর তার জন্য কোম্পানিগুলো অর্থ ব্যয় করে প্রচুর। আর সেই বিজ্ঞাপনগুলো তারা বিভিন্ন সাইটে দিয়ে থাকে। যে এই বিজ্ঞাপন দেখার জন্য এই সাইটে চুক্তিবদ্ধ হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। এরকম কিছু ওয়েবসাইট হলো-- ClixSense, NeoBxu, PrizeRebel, Paidverts ইত্যাদি।

২৩. Captcha Solve করে আয়ঃ

ক্যাপচা সলভার হিসেবে কাজ করতে চাইলে ক্যাপচার ইমেজ পড়ে বুঝতে হবে এবং সঠিক অক্ষর বা চিহ্ন লিখতে হবে। ভালো আয়ের জন্য খুব দ্রুত টাইপ করতে জানতে হবে। প্রতি ১০০০ ক্যাপচা সমাধানের জন্য $২ পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। কিছু ক্যাপচা সাইট হলো--- Kolotibablo, MegaTypers, CaptchaTypers, ProTypers, Captcha2Cash, 2Captcha, Qlinkgroup, VirtualBee, FastTypers, PixProfit ইত্যাদি৷

২৪. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ


সার্চ ইঞ্জিন  অপটিমাইজেশনের প্রধান প্রধান উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে রয়েছে-
একটি সাইটকে সকলের কাছে সহজে পৌছে দেওয়া। ওয়েব সাইটের জন্য প্রিয়তা বৃদ্ধি করা, সাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক বৃদ্ধি করা, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন থেকে আয় করার পণটাটফরম হিসেবে কাজ করে, তথ্য বিনিময় ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শক্ত ভিত হিসেবে কাজ করে।

এই কাজে যারা দক্ষ তারা এবং যে ওয়েবসাইট বা ব্লগ প্রথম পৃষ্ঠায় স্থান পায়, তারা ইনকামেরও সুযোগ পায়।

২৫. Micro-Worker হিসেবে অর্থ উপার্জনঃ

মাইক্রো ওয়ার্কার হিসেবে অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা যায়। যেমনঃ একটি বিষয়বস্তু শনাক্তকরণ, বিভিন্ন সাইটে রেটিং এবং মন্তব্য করা, ওয়েবসাইট ভিজিট করা, ভিডিও দেখা, কন্টাক ডিটেইলস খোঁজা, ছোট ধরণের ওয়েব রিসার্চ করা, ছোট কন্টেন্ট লিখা ইত্যাদি।

২৬. ওয়েবসাইট বিক্রি বা ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করে আয়ঃ

একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে তাতে ৫/৬ মাস নিয়মিত সময় দিয়ে ওয়েবসাইট ভিজিটর এবং রিডার ক্রিয়েট করে তা বিক্রি অথবা নিলামে তোলার মাধ্যমে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করে ইনকাম করা যায়।

২৭. স্টক এবং ফরেক্স ট্রেডিং করে আয়ঃ

অনলাইনে স্টক ট্রেডিং এবং ফরেক্স ট্রেডিং করে ইনকাম করা যায়। তবে যথেষ্ট জ্ঞান ছাড়া এই বাজারে প্রবেশ করা খুবই কঠিন।

২৮. অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয়ঃ

যারা ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা ইনকামের একটা উৎস হতে পারে।  শাট্টারস্টক, ফটোলিয়া, আইস্টকফটো, ফটোকিককেটের মত বড় বড় সাইটগুলো রয়েছে সেখানে নিজের তোলা ফটো জমা দেওয়া যায়। কেউ সেই ছবি কিনলে তার মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।

২৯. আরো কিছু উপায়ঃ 

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো ছাড়াও অনলাইনে ইনকামের আরো কিছু উপায় আছে। যেমন ই-মেইল মার্কেটিং, বিভিন্ন ক্রিপ্টো-কারেন্সি অর্থাৎ বিটকয়েন কেনাবেচা করা, অনলাইনে ডলার কেনা-বেচা করা ইত্যাদি।

ইন্টারনেট থেকে আয় করার কিছু ওয়েবসাইট সেবাঃ

1. www.upwork.com
2. www.fiverr.com
3. www.freelancer.com
4. www.peopleperhour.com
5. 99designs.com
6. www.guru.com
7. belancer.com

অনলাইন থেকে উপার্জিত টাকা উত্তোলনের উপায়ঃ

১. চেকের মাধ্যমে টাকা পাওয়া
২. পেপ্যাল
৩. পেওনিয়ার প্রিপেইড ডেবিট মাস্টারকার্ড
৪. মানিবুকারস
৫. এলার্টপে

পরিশেষে দক্ষতা, ধৈর্য এবং লেগে থাকার মানসিকতাই অনলাইনে টাকা ইনকামের মূল সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

ধন্যবাদ সবাইকে।

(ছবি এবং তথ্য সংগৃহী) 

(বি.দ্রঃ এই লেখাটার মাঝে ৪/৫ ঘণ্টার শ্রম নিহিত। কখনো এত সার্চ করে সব তথ্য এক জায়গায় করে এত কষ্ট করে টাইপ করে লেখা হয়নি)

Friday, August 9, 2019

aamipariniguchateপারিনি এখনো গুছাতে নিজেকে
ভেসে যাচ্ছে সব আজ শূণ্যলোকে!
ধ্বংস হয়ে গেছে ভেতরটা যে আমার
কিভাবে করব আমারে পুনঃআবিষ্কার?

নাহ! দিকহারা এই জীবনসমুদ্রে তরীর পাল আমি তুলবই। জীবনতরী তার নিজ গন্তব্যে পৌঁছবেই।
যত কালবৈশাখী আঁছড়ে পড়ুক, যত ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন সব লন্ডভণ্ড করে দিক, যতই বিক্ষুব্ধ তরঙ্গ এসে তীর ভাঙ্গুক__ জীবনতরী তা মাড়িয়ে বিজয় নিশান উড়াবেই।।।।

 বাজবে! বাজবেই প্রলয় বিষাণ
   সব নির্বেদ আজ মাড়াবোই,,
     উড়বে! উড়বেই বিজয় নিশান
       শির উঁচু করে দাঁড়াবোই!

_____তাসমিয়া জান্নাত
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ 

Thursday, August 8, 2019


 কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা


গণনাযন্ত্র বা কম্পিউটার (ইংরেজি: Computer কম্পিউটার) হল এমন একটি যন্ত্র যা সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনা সংক্রান্ত কাজ খুব দ্রুত করতে পারে।  কম্পিউটার (computer) শব্দটি গ্রিক "কম্পিউট"(compute)শব্দ থেকে এসেছে। compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার(computer) শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করে। সভ্যতার বিকাশ এবং বর্তমানে তার দ্রুত অগ্রগতির মূলে রয়েছে গণিত ও কম্পিউটারের প্রবল প্রভাব। বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে।

 বর্তমান জীবন একান্তভাবেই বিজ্ঞাননির্ভর। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও উদ্ভাবন জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই মানুষের নানা প্রয়োজন মেটাচ্ছে। কেবল তাই নয়, বিজ্ঞান মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতেও আমূল পরিবর্তন এনেছে। বিজ্ঞান শুধু মানুষের দৈনন্দিন জীবনকেই সমৃদ্ধ করেনি, তার চিন্তাজগৎকেও প্রভাবিত করেছে। উন্নতির দিকে নিয়ে গেছে মানবসভ্যতাকে। এ উন্নতির মূলে কাজ করেছে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি। আধুনিক জীবনে কম্পিউটার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বৈচিত্র্যপূর্ণ। কাজেকর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তথ্যপ্রযুক্তির এক পরম বিস্ময়কর আবিষ্কার কম্পিউটার। মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে, প্রয়োজনীয় কাজেকর্মে, বিনোদনসহ সকল ক্ষেত্রেই কম্পিউটার অতুলনীয় সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। যান্ত্রিক সভ্যতার চালিকাশক্তি হিসেবে কম্পিউটার আজ ঘরে ঘরে স্থান করে নিয়েছে। কম্পিউটারের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এর ব্যাপক ব্যবহার এখন সর্বজন স্বীকৃত। শিক্ষাক্ষেত্রে, জনস্বাস্থ্যে, তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটারের ব্যবহার এত ব্যাপক যে খুব সহজেই একে কম্পিউটারের যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আধুনিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো কাজই নেই যা কম্পিউটার করছে না। কম্পিউটার কোটি কোটি সংখ্যার জটিল হিসাব কয়েক মুহূর্তে সমাধান করছে। ব্যাংক, বীমা, কিংবা বড় বড় কলকারখানা পরিচালনার পরিকল্পনা, নির্দেশনা, আয়-ব্যয়, লাভ-ক্ষতির সমস্ত হিসাব-নিকাশ হচ্ছে কম্পিউটারের সহায়তায়।  বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থায়, গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এমনকি শিক্ষা ক্ষেত্রেও পাঠ্যবইয়ের সহায়ক তথ্য প্রদান থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফল প্রকাশ পর্যন্ত যাবতীয় কার্য সম্পাদনে রয়েছে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার। চিকিৎসা ক্ষেত্রে একদিকে কম্পিউটার রোগ নির্ণয় এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা নিরূপণ করছে। অন্যদিকে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও সহায়তা করছে।  কম্পিউটার ছবি আঁকছে, পুরনো ছবি সম্পাদনা করছে, মানচিত্র আঁকছে, প্রিন্টিং ও গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং বাড়ি-ঘর, গাড়ি, বিমান, ভাস্কর্য প্রভৃতির নকশা তৈরি করছে। বিনোদনের ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের জুড়ি মেলা ভার। ঘরে বসেই ক্রিকেট, ফুটবল, রেসিং, দাবাসহ নানারকম ভিডিও গেমস্ খেলা যায় কম্পিউটারে। যে সমস্ত দুরূহ কাজ মানুষের অসাধ্য, যে সব দুর্গম এলাকায় মানুষ যেতে অক্ষম কম্পিউটার সেখানেও পৌঁছে যাচ্ছে এবং কার্য সমাধা করছে সুনিপুণভাবে। উদাহরণস্বরূপ, কম্পিউটার চালিত ‘স্ক্যানার’ আটলান্টিক মহাসাগরের অতল থেকে খুঁজে এনেছিল বিধ্বস্ত বিমানের অংশ।  মুদ্রণ শিল্পেও কম্পিউটার এক এবং অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করছে। কম্পিউটারে ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসেই বিশ্বের যেকোনো তথ্য জানা সম্ভব। এছাড়া তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রেও কম্পিউটার সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। কম্পিউটারের এমন বহুবিধ ব্যবহারের কারণে আধুনিক জীবনের সঙ্গে এর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।  আধুনিক জীবনের একটি দিনও তাই কম্পিউটার ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। কাজের গতি, বিশুদ্ধতা ও নির্ভরশীলতার দিক থেকে কম্পিউটারের ক্ষমতা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। বহুবিধ কার্যক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার মানব সভ্যতাকে দিয়েছে বিপুল কর্মসুবিধা, দুরন্ত গতি এবং সর্বোপরি অযুত সম্ভাবনা।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Wednesday, August 7, 2019

জেতার প্রস্তুতি

তাসমিয়া জান্নাত


সব ভুলকে পেছনে ফেলে চল এগিয়ে যাই

মিশে যাই সম্মুখগামীদের ভীড়ে।

হেরিব না কোনো দিক, মানিব না কোনো বন্ধন, করিব না আর ক্রন্দন, বিনাশ হবে মিথ্যার প্রহসন। আমাদের আছে কষ্টের শক্তি,

আমাদের আছে ধৈর্যের শক্তি,

আমাদের আছে প্রচেষ্টার শক্তি,

আমাদের আছে হেরে যাওয়ার ক্রোধ,

ক্রোধই আমাদের শক্তি।

দুঃখ তো দুঃখ নয়

কষ্ট তো কষ্ট নয়

দুঃখ আমাদের সম্বল

কষ্ট আমাদের রুপান্তরিত ঢাল।

নতুন করে হারবার ভয় আমাদের নেই 

হারতে হারতেই আমরা এতদূর এসেছি।

এবার জেতার পালা_

এবারের সময়টা আমাদের_

হ্যাঁ, ঠিক বলেছি, আমাদের।

কষ্টের অভিজ্ঞতাই আমাদের জেতার অলংকার

আমরাই হবো ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া সিপাহসালার

হতাশাকে ধ্বংস করার তলোয়ার

বিষণ্ণতাকে বিনষ্ট করার বর্ম

আমাদের নগ্ন তরবারির আঘাতে ছিন্ন-ভিন্ন হবে সমস্ত অবহেলার মূল হোতারা।

আমরা সম্মুখগামী,

আমরা প্রতিবাদী,

আমরা সাহসিনী,

আমরা স্রোতস্বিনী,

আমরা তেজস্বিনী,

আমরা দুর্ধষীনি,

আমরাই তো শক্তির আধার।

কে রুখবে আমাদের? দমার পাত্রী নই।

কে হারাবে আমাদের? হারতে রাজি নই।

আমরাই আনবো  নতুনত্ব _

পুরাতনকে ভেঙে গড়বো আমরাই_

বিষাক্ত পরিবেশকে নির্মল করবো তো আমরাই।

নবযুগের করাঘাতে বন্ধ দরোজা খুলবো আমরাই,

দখিনের জানালা দিয়ে প্রবাহিত হবে দখিনা বাতাস

আগামি দিনের সূর্যালোক তো হবে শুধুই আমাদের।

আলোকিত হব আমরা, আলোকিত করবো গোটা বিশ্বকে।

চল্,  বন্ধুরা!  আর কিসের ভয় তবে,,

জিতবো আমরা, দেখবে সবে।


উৎসর্গ__দুই বন্ধুকে


৩১ আগস্ট, ২০১৬

আমার প্রিয় খাবার

হালাল খাবার তো সবই খাই, কোনটাকে বাদ দিয়ে আমি কোনটার গুণগান গাই!

এই প্রেজেন্টেশন দেখে ভাবছিলাম, আমি মনে হয় কিছুই লিখতে পারব না। তাও লিখা শুরু করলাম।
আসলেই আমি সব খাবারই খাই। যখন যেটা খাই সেটাই আমার ভালো লাগে। একটার সাথে অন্যটার তুলনা দিতে পারি না। আমার পছন্দের খাবার কী...সেই উত্তর দেওয়াটা আমার জন্য কঠিনই বটে। গরিব ঘরে জন্মেছি। সেরম পছন্দনীয় খাবার যে রান্না হতো, তাও না। সামান্য একটুকু তারকারি আর ভাতটুকুই অমৃত মনে হতো। শহরে থাকছি ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ফুফুর বাসায় থাকার সুবাদে নানান ধরণের তরকারি, খাবার খাওয়া হয়েছে। তবে অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার বরাবরই অপছন্দের৷ সাদামাটা খাবারই ভীষণ ভালো লাগে। বিরিয়ানির চেয়ে সাদা ভাতটা খুব পছন্দের।  তবে বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি, টকজাতীয় আচার আর ভাজা মাছের টুকরো হলে তো আর কথাই নেই। (এটা লিখতে লিখতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল)। সাথে থাকে সাদা সবজি ভাজি। গাজর, ক্যাপসিকাম, আলু, গোশতের টুকরো, মটরশুঁটি ইত্যাদি বিভিন্ন উপাদানে তৈরি। আর হ্যাঁ, চিকেন ফ্রাই, লইট্যা মাছ ফ্রাই দারুণ লাগে খেতে। শুকনো সাদা ভাতের সাথে যদি তিত করলা ভাজি হয় না, আমার আর কিছু লাগবে না। তিত করলা ভাজি দিয়েই শুকনো ভাত খেয়ে ফেলতে পারবো। ফুফুর হাতের সব ধরণের ভাজিই খেতে অসাধারণ লাগে আমার। ঢেঁড়স ভাজি, আলু ভাজি, করলা ভাজি ইত্যাদি৷ আর সবুজ শাকও আছে পছন্দের খাবারের তালিকায়। কলমি শাক, পাট শাক, টক পাতার ঝোল, ঢেকিশাক, পুঁই শাক, কুমড়ো শাক নানান ধরণের নাম না জানা শাক ফুফু রান্না করে। সবগুলোই মজাদার হয়। সাদা ভাত, শাক আর কাঁচা মরিচ ভিন্ন স্বাদের জন্ম দেয়।

তাছাড়া আলু ভর্তা, ডালভাত খেয়ে কিন্তু তৃপ্তির ঢেঁকুর সকলেই তুলে। আমিও বা বাদ যাই কেন?

আর হ্যাঁ, ইলিশ মাছের নানান পদের রান্নার তো জুড়ি মেলা ভার। ফুফুর হাতে জাদু আছে। সব রান্নাই এত ভালো করে, বলে বুঝানো যাবে না। খেয়ে টেস্ট করতে হবে। গতকালও ফুফা ইলিশ নিয়ে এল। দিদি নাম্বার ওয়ানে ইলিশ নিয়ে সবাই বলেছিল। রচনা ব্যানার্জি সবশেষে বলেছিল...আজকে সবার মনে হবে ডিনারটা যদি ইলিশ দিয়ে হয়। ফুফা রাতেই ডিমে ভর্তি ইলিশ নিয়ে। আহা: ইলিশের ডিমভাজাটা সেই টেস্টি হয়েছে। ওহ হ্যাঁ, যে কোনো ধরণের মাছ ভাজা আমি অবলিলায় গলাধঃকরণ করতে পারি। অতিরিক্ত ভালো লাগে ভাজা মছমছে মাছ খেতে।

খাবারের কথা কি আর বলবো? কত মজার মজার পদ সব তো মনেও নেই। গোটা রসুন দিয়ে গরুর গোশত রান্না ওটাও দারুণ লাগে খেতে। আর গোশতের ঝোলে নরম হওয়া পুরো রসুনটা খেতে আমার খুব ভালো লাগে। যদিও গরুর গোশত আমার পছন্দের খাবারের তালিকায় নেই। তাও মাঝেমধ্যে এত ভালো লাগে, মনে হয় এটাই আমার প্রিয় খাবার। তবে গোশত-পরোটা খেতে ভালো লাগে। মায়ের হাতের বানানো।

মিষ্টিজাতীয় খাবার একটু কমই পছন্দ করি। তাও টক দই খেতে ভালো লাগে। মিষ্টির মধ্যে কালো জাম, সন্দেশ, আফলাতুন, হিস্যা (ঠিক নামটা ঠিক জানি না। দইয়ের মতো নরম টাইপের), লাচ্ছিটাও পছন্দের তালিকায় পড়ে। আর আছে ফ্রুট সালাদ। খুব ভালো লাগে খেতে।

দুধ চা যদিও অপছন্দের তবে...লেবু আর আদা চা এক কাপ খেতে পারলে দারুণ লাগে।

সবশেষে আমার কোন খাবার প্রিয় তা বিশেষভাবে বলা যাবে না। সময়ভেদে, আবহাওয়া ভেদে খাবারের প্রতি পছন্দনীয়তা পাল্টায়।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Situational English

Situational English: part - 2

Use Of Request

★Can you do? (General)
★Could you do? (Polite)
★Would you please do? (A bit polite)
★Would you mind doing? (More polite)
★Would you do me a favor? (Supreme request) 

So, guys let's practise.useofrequest

Tuesday, August 6, 2019

Talk Over Phone

tasmia.zannat71@gmail.com


Situational English: 01


 Talk Over Phone

★ Who am I speaking to/with?
★ Is that Search English group?
★Can I talk to Admin sir?
★ Would you Please leave a message for me to Admin sir? (আপনি কি আমার হয়ে অ্যাডমিন স্যারকে সংবাদটা জানাবেন?
★ Hold on, Please/Hang on, Please/Just a moment.

উচ্চারণঃ
★Would you (উজিয়া)
নিয়মঃ D এর পরে Y থাকলে উচ্চারণ 'জ' এর মতো হবে।
★Leave a (লিভা)
★Message (মেসীজ)
নিয়মঃ শব্দের শেষে ege/age থাকলে উচ্চারণ হবে 'ইজ'। যেমন College (কলীজ)
★Just a (জায'আ)
★Can, Talk (ঠ্বোওক)
  নিয়মঃ শব্দের শুরুতে /P/, / T/, /K/ থাকলে জোর দিয়ে উচ্চারণ করতে হয়। বাংলা বর্ণ খ, ঘ, ছ, ঠ, ধ, ভ ইত্যাদির মতো মহাপ্রাণ উচ্চারণ হয়।

শামসুর রাহমান শামসুর রাহমান ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার রূপকার। বিংশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্র...